আমি যে কম্পিউটারের অনেককিছুই পারি এবং ভালো পারি, এটা আমাকে যারা চেনে- জানে। সে সুবাদে কেউ হয়ত কম্পিউটারে কী শেখা যায়, কী করলে সহজে আয় করা সম্ভব- এই ধরণের প্রশ্নের উত্তরও বছরে কয়েকজনকে দিতে হয়। তাই একবার লিখে ফেলছি, ভবিষ্যতে আপডেট করতে থাকবো ইনশাল্লাহ।

১। যে কাজ যত কমদিনে শেখা যায়, সে কাজের দাম কম।

আপনি হয়ত ১৫-৩০ দিনেই বেশ ভাল টাইপিং শিখে ফেলতে পারবেন। কিন্তু এই কাজের সম্মান ও সম্মানি কম। দোকানে আগে এক পেজ (দরখাস্ত/এজাতীয়- উপরে নিচে বেশ ফাঁকা) বাংলা টাইপ করতে ২০ টাকা নিতো সম্ভবত। একাধিক ভাষা শিখলে আরো বেশি দাম। যেমন যে শুধু বাংলা লেখে তারচেয়ে ইংরেজি, আরবী, উর্দু পারলে আরো বেশি দাম।

এছাড়া এধরণের দোকান দিলে স্কুল-কলেজ ও চাকরির, ভিসা-পাসপোর্টের আবেদনসহ বিভিন্ন কাজ করা যায়। আমার ও আমার ছোট ভাইয়ের পাসপোর্টের আবেদন আমিই করেছিলাম, দোকানেল করলে ৩০০+ প্রতিটাতে টাকা লাগতো।

২ বার ৪ জনের ইন্ডিয়ান ভিসার আবেদনও করেছি, সবগুলোই এক আবেদনেই হয়ে গেছে।

ইউটিউব থেকেই শেখা যায়, আটকে গেলে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ আছে- সেগুলোতে জিজ্ঞেস করলেই উত্তর পাওয়া যায়।

২। প্রতিটা কাজের সাথে ইংরেজি দক্ষতা যত ভাল থাকবে, তত ভালো। বিশেষ করে অনলাইনে কাজ করতে চাইলে তো অবশ্যই লাগবে।

ইংরেজি শেখার জন্য (ক্লাস ৫ পর্যন্ত পড়া থাকলে) পছন্দের সূরা – যেমন সূরা কাহাফের ইংরেজি অনুবাদ পড়া যায়। বিভিন্ন ইংরেজি নিউজ ওয়েবসাইটে ঢুকে প্রতিদিন ৫-১০টা শিরোনাম পড়া যায়।

পড়া ও শোনা তো তাও সহজ, লেখা এবং বলা আরেকটু বেশি সময়ে শেখার জিনিস।

৩। বয়স কম থাকলে- ছাত্র থাকলে সুবিধা। এক বছর রমজানে / দীর্ঘ ছুটিতে একেক সেক্টরের বিভিন্ন কিছু শিখে পরে যেটা ভালো লাগে- সেটায় স্থায়ী হওয়া যায়। কিন্তু সময় কম থাকলে আরেকটু দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

৪। বলা যায়- একটি মোটামুটি ভালো মানের কাজ শিখতে ৬ মাস লাগবেই। ১৮০ দিনে দৈনিক ৫ ঘণ্টা মোট ৯০০ ঘন্টা (কমপক্ষে) সময় দিলে কোনো একটা সেক্টরের অনেক কিছু শেখা সম্ভব।

সেক্টরঃ গ্রাফিক ডিজাইন (ফটোশপ / ইলাসট্রেটর)

চ্যালেঞ্জঃ কাজ বা ব্যানার প্রিন্ট যারা করে তাদের দোকান/প্রেসেই গ্রাফিক ডিজাইনার থাকে। আর অনলাইনে করতে চাইলেও ইংরেজি পারা + সারা বিশ্বের অনেকের সাথে কম্পিট।

সেক্টরঃ ভিডিও এডিট (প্রিমিয়ার প্রো / আফটার ইফেক্টস)

চ্যালেঞ্জঃ ‘ভালো’ মানের শেখা তুলনামূলক বেশি সময় + ধৈর্য্য লাগে। কম্পিউটার দামী হলে ভালো- বরং দামী হতে হয়।

এছাড়া এই দুই সেক্টরে হালাল হারাম বেছে চলা / হালাল হারাম চিন্তা করা।

সেক্টরঃ ওয়েব / অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট

একদম নিজের অভিজ্ঞতা থেকে- এই লাইনে ৬ মাস কিছুই না। ৬ মাসে শুধু ‘যা না হলেই নয়’ তাই হবে। অতটুকুতে চাকরি হবে কিনা সন্দেহ আছে। সুতরাং আরো বেশি শিখতে হবে – ফলে আরো ৬ মাস দিতেই হবে।

চ্যালেঞ্জঃ এই সেক্টরে হারাম হয়ত একটু কম।

তবে উপরের সকল সেক্টরে এবং এই সেক্টরে – এআই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। ai ফটো, ভিডিও, ওয়েবসাইট সবই বানাতে পারে। সব কাজই এআই যা পারে, তার চেয়ে ভালো শিখতে হবে। অবশ্য এআই-ও সব দ্রুত শিখছে।

সেক্টরঃ SEO / ডিজিটাল মার্কেটিং

চ্যালেঞ্জঃ এই সেক্টরে মনে হয়ত ধোঁকাবাজি সবচেয়ে বেশি। হাবিজাবি শিখিয়ে দিয়ে কোর্স করানো হয়। তারপর “আমাদের প্রতিষ্ঠানে / কোর্সে আরো মানুষ ভর্তি করান, তাদের ভর্তির টাকার কমিশন আয় করুন”।